পোল্যান্ড কাজের বেতন কত ২০২৫

পোল্যান্ড কাজের বেতন কত: পোল্যান্ড বাল্টিক অঞ্চলে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্তি একটি দেশ। দেশটি ২০০৪ সালে থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। ইউরোপের অন্যতম সুন্দর একটি দেশ হলো পোল্যান্ড। ইউরোপের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশীদের কাছে কাজের জন্য পোল্যান্ডে যাওয়ার চাহিদা ব্যাপক। শুধু বাংলাদেশ থেকে নয় বাংলাদেশ থেকে যারা অলরেডি সৌদি আরব, কাতার, দুবাই, মালেশিয়া ইত্যাদি দেশে কাজের জন্য গেছেন তাদেন মধ্যেও পোল্যান্ড যাওয়ার চাহিদা ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। 

যার ফলে এইসব দেশ থেকে অনেকেই বিভিন্ন এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে পোল্যান্ড গিয়ে থাকেন। যারা এখনো পোল্যান্ড যাননি কিন্তু যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য এই আলোচনায় আমরা পোল্যান্ডে কাজের বেতন কত এটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

আরও পড়ুন :

পোল্যান্ড কাজের বেতন কত

পোল্যান্ড কাজের বেতন কত?

ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে দক্ষ শ্রম শক্তির চাহিদা প্রচুর। এই দেশে বাংলাদেশিদের জন্য বিভিন্ন খাতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তার মধ্যে উন্নতম কিছু হলো, কাবাবের দোকানে কাজ, পোলিশ মাংস ফ্যাক্টরিতে কাজ, সেলুনের কাজ, ওয়েল্ডিংয়ের কাজ, ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ ইত্যাদি। তবে বাংলাদেশ থেকে নতুন যারা পোল্যান্ড যান তারা মূলত কাবাবের দোকান এবং পোলিশ মাংস ফ্যাক্টরি গুলোতেই বেশি কাজ করে থাকেন। এই কারণে এখানে এই দুটি খাতকে প্রাধান্য দিয়ে আমাদের আলোচনা চালিয়া যাবো। 

আরও পড়ুন: পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫

কাবাবের দোকানে কাজের বেতন: 

পোল্যান্ডের কাবাবের দোকানে কাজের বেতন

পোল্যান্ডে বাঙালিরা প্রচুর পরিমানে কাবাবের ব্যবসার সাথে জড়িত। তাই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া নতুন অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের জন্য কাজের একটি অন্যতম খাত হচ্ছে বাঙালিদের এইসব কাবাবের দোকান গুলো। যদিও কাবাবের এই দোকান গুলোতে বেতন পোলিশ ফ্যাক্টরির তুলনায় কিছুটা কম। তবে সব দিক বিবেচনা করলে নতুনদের জন্য একটি অন্যতম ভালো কর্মক্ষেত্র হলো এই কাবাবের দোকান। 

কাবাবের এই দোকান গুলোতে সাধারণ একজন নতুন কর্মীকে বেতন দেওয়া হয় ঘন্টা প্রতি ১০ থেকে ১২ জলোটি (Złoty)। জলোটি (Złoty) হচ্ছে পোল্যান্ডের মুদ্রার নাম। বর্তমানে এক জলোটি (Złoty) সমান বাংলাদেশি ২৯ থেকে ৩০ টাকা। সেই হিসাবে পোল্যান্ডের কাবাবের দোকান গুলোতে ঘন্টা প্রতি বেতন বাংলাদেশি ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। 

আরও পড়ুন: সার্বিয়া কি সেনজেন হবে

পোল্যান্ডের কর্মঘণ্টা হচ্ছে দিনে ৮ ঘন্টা আর কর্মদিবস হচ্ছে মাসে ৬ দিন। কিন্তু কাবাবের দোকান গুলোতে অন্যতম একটি সুবিধা হলো এই দোকান গুলোতে প্রতিদিন ১০-১২ ঘন্টা করে কাজ করা যায়। এবং মাসে প্রায় ২৭ থেকে ২৮ দিন কাজ করা যায়। কাবাবের দোকান গুলোতে কাজের আর একটি সুবিধা হলো এখানে কাজ করা সকল কর্মীর থাকা, খাওয়া, ট্যাক্স সবকিছু মালিক বহন করে। 

যার ফলে কাবাবের দোকানে কাজ করা একজন কর্মীর আনুসাঙ্গিক সব কিছু বাদ দিয়ে মাসিক বেতন আসে ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা। অনেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন রাখতে পারেন। তবে নতুন অবস্থায় এটি একটু কষ্টকর হয়ে যায়। 

সম্পর্কিত: বুলগেরিয়া বেতন কত ২০২৫

পোলিশ ফ্যাক্টরিতে কাজের বেতন:

পোলিশ ফ্যাক্টরিতে কাজের বেতন

পোল্যান্ডের ফ্যাক্টরিতে কাজ বলতেই সাধারণত মাংস ফ্যাক্টরিতে কাজ করা বুঝায়। পোল্যান্ডে প্রচুর পরিমানে মাংস প্রসেসিং ফ্যাক্টরি রয়েছে। পোলিশ এই ফ্যাক্টরি গুলোতে মুরগীর পাশাপাশি মুসলিমদের জন্য হারাম এমন প্রানীর মাংসও প্রসেস করা হয় এবং সেগুলো বিভিন্ন ধরনের আইটেম তৈরি করা হয়। যার ফলে যারা ধর্ম নিয়ে সচেতন তারা এই ফ্যাক্টরি গুলোতে কাজ করতে চান না। 

এছাড়াও এই ফ্যাক্টরি গুলোর আবহাওয়া প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডা থাকে। কারণ ফ্যাক্টরির আবহাওয়া ঠান্ডা না রাখতে মাংস নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। যার ফলে এই ফ্যাক্টরি গুলোতে কাজ করা বাঙালীদের জন্য অনেকটা কষ্টকর হয়ে যায়। অনেকে এই ফ্যাক্টরি গুলোতে টিকতে না পেরে পরবর্তীতে কাবাবের দোকান গুলোতে যোগদান করেন।  

আরও পড়ুন: কিরগিজস্থান গার্মেন্টস বেতন কত ২০২৫

তবে ফ্যাক্টরির কর্ম পরিবেশ কিছুটা কঠিন হলেও কাবাবের দোকানের চেয়ে ফ্যাক্টরির কাজের বেতন অনেক বেশি। ফ্যাক্টরি গুলোতে একজন অনভিজ্ঞ নতুন শ্রমিককে ঘন্টা প্রতি ২০ থেকে ২২ জলোটি (Złoty) বেতন দেওয়া হয়। অর্থাৎ দৈনিক বেতন প্রায় ৪৮০০ টাকা থেকে ৫২০০ টাকা। তবে ফ্যাক্টরির কর্মঘণ্টা হচ্ছে দিনে ৮ ঘন্টা আর কর্মদিবস হচ্ছে মাসে ৬ দিন। 

তবে কাবাবের দোকানের মত ফ্যাক্টরিতে খাওয়া ও ট্যাক্স কোম্পানি বহন করে না। তবে সাধারণত কোম্পানি থাকার খরচ শুধু বহন করে। বাকি গুলো নিজেকে বহন করতে হয়। তবুও আনুসাঙ্গিক সব কিছু বাদ দিয়ে পোলিশ ফ্যাক্টরিতে একজন নতুন কর্মী মাসিক বেতন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত বেতন রাখতে পারে। অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে সাথে কাবাবের দোকানের মত ফ্যাক্টরিতেও বেতন বৃদ্ধি পায়।

শেষ কথা:

সবদিক বিবেচনা করলে পোল্যান্ডে নতুনদের জন্য সেরা কর্মক্ষেত্রে হলো বাংলাদেশিদের কাবাবের দোকান গুলোতে চাকরি। কারণ এই দোকান গুলোর মালিক যেহেতু বাংলাদেশি হয় সেহেতু তারা নতুনদের পোলিশ ভাষা সহ পোল্যান্ডের আইন কানুন শিখতে বেশ সাহায্য করে। যদি এই দোকান গুলোতে বেশি কাজ করতে হয় তবুও পোলিশ ফ্যাক্টরির কাজের কাজের মত শরীরে পেশার পরে না। তাই শুধু মাসিক অতিরিক্ত ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার চিন্তা না করলে সব কিছু মিলিয়ে কাবাবের দোকান গুলো নতুনদের জন্য সেরা। আর পোল্যান্ডে সিংহভাগ বাংলাদেশি মূলত এই কাবাবের দোকানেই কাজ করে। এই ছিল আমাদের পোল্যান্ড কাজের বেতন কত তা নিয়ে আলোচনা। 

Next Post Previous Post
1 Comments
  • Anonymous
    Anonymous 6 January 2025 at 02:59

    Dhonnobad... Textaill er kaj oi deshe ache ki

Add Comment
comment url